কাঠবাদাম উৎসবের খাবারে একটি পরিচিত নাম। আমরা
কাঠবাদামকে ক্ষীর, পায়েস, সেমাইয়ের সঙ্গেই দেখতে অভ্যস্ত।
আমরা অনেকেই জানি না যে কাঠবাদাম খালি মুখেও খাওয়া যায়।
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যেকোনো বড়
অস্ত্রোপচারের পর বা দেহের কোনো হাড় ভেঙে গেলে, কাঠবাদাম
খেলে হাড় পুষ্টি পাবে দ্রূত। লম্বা আকারের বাদাম, খোসা (পাতলা
আবরণ) ছাড়িয়ে খেতে হয়। কাঁচা খেতে পারলে খুব ভালো। কাঁচা
হজম করতে না পারলে পানিতে ভিজিয়ে খাবেন। বাদামের ওপর
পাতলা বাদামি বা খয়েরি রঙের আবরণ থাকে। পানিতে ১০ থেকে
২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই খোসাটা উঠে যায়। চিবিয়ে বা খাবারের
সঙ্গে মিশিয়ে সেদ্ধ করে খাওয়া যায়।
গর্ভবতী মহিলা, বাড়ন্ত শিশু ও মেনোপোজ (চিরতরে ঋতুস্রাব বন্ধ
হয়ে যাওয়া) হয়ে গেছে—এমন নারীদের জন্যও কাঠবাদাম ভীষণ
জরূরি। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আবার
বয়স্ক নারী ও পুরূষের জন্যও এই বাদাম ভীষণ জরূরি। কারণ, বয়স
বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে আমাদের দেশে ৪০ বছরের পর
বেশির ভাগ মানুষের অসটিও পোরোসিস হয়, এই অসুখে হাড় দুর্বল
হয়ে যায়, যা পুরো শরীরের ওপর ফেলে ক্ষতিকর প্রভাব। এমন
অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন দেহের ওজন কমানো,
ডায়াবেটিস, উ‛চ রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা ও নিয়মিত
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
মেনোপোজ হয়ে যাওয়া নারীদের হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। তাঁদের দেহে
জরূরি অনেক হরমোন তৈরি হয় না (হরমোন শরীরের জন্য উপকারী
উপাদান)—এমন অবস্থায়ও কাঠবাদাম হতে পারে আপনার বন্ধু।
প্রতিদিন সর্বো‛চ তিনটা খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীরের জন্য
জরূরি অনেক উপকরণ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,
ত্বকে জোগায় পুষ্টি, সাহায্য করে বার্ধক্যকে দূরে ঠেলতে। ত্বকের
অসুখগুলোকে দূরে রাখে।
দাঁত, হাড়, নখ, চুলকে উজ্জ্বল ও সুন্দর করতে এই বাদামের
প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তবে সবাই হজম করতে পারে না।
অবশ্যই নিজের হজমক্ষমতা বুঝে বাদাম খান।
ডাক্তার ফারহানা মোবিন
স্কয়ার হাসপাতাল,ঢাকা
বাংলাদেশ